গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে আকত আলি খান হত্যাকান্ডে জড়িতদের বিচার ও শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
আজ বুধবার বেলা ১২ টায় গোপালগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত আকত আলি খানের ছেলে সোহেল খান ও পুত্রবধূ হাসনা বেগম।
হাসনা বেগম বলেন, ৪ জুন রাত সোয়া ১১ দিকে বাড়ির অদূরেই শোরগোল শুনতে পাই । বাড়ি থেকে বের হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ওই এলাকার শহিদ সরদারের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। সেখানে দেখি আমার শ্বশুর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে এবং তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কোপের দাগ। এ সময় আমরা তাকে উদ্ধার করে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ হাসপাতালে আসে এবং ময়না তদন্তের জন্য লাশ গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠায়। থানায় গিয়ে আমার দেবর সোহেল শেখ বাদি হয়ে এজাহার দায়ের করে। ওই দিন পুলিশ মামলা রেকর্ড করেনি । দুই দিন কালক্ষেপনের পর ৬ জুন থানায় মামলা রেকর্ড হয় (মামলা নং মুকসুদপুর জিআর ২০২/২৫)। ৯ জুন প্রতিপক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে মুকসুদপুর থানায় একটি লুটের মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় আমাদের পরিবারসহ ৩১ জনকে আসামী করা হয়৷ ১৬ জুন ওই মামলায় আদালত থেকে জামিন পাই আমরা। ওই রাতে পুলিশ আমার ভাসুর হেলাল খানকে আটক করে। সে এখন কোথায় আছে আমরা তা জানি না।
তিনি আরও বলেন, আমার শশুরকে হত্যা করে আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং আমাদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। পুলিশ রহস্যজনক কারণে তাদের গ্রেপ্তার করছেনা। অথচ আদালতের জামিন থাকা সত্ত্বেও একটা মিথ্যা লুটের মামলায় আমার ভাসুরকে (নিহতের বড় ছেলেকে) পুলিশ আটক করে। আমার শ্বশুরের হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। সেই সাথে ভাসুরের সন্ধান ও মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
নিহতের ছেলে এবং ওই ইউনিয়নের যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সোহেল খান বলেন, আমার বড় ভাই হেলাল স্থানীয় যুবদল নেতা। বিএনপির পরিবার হিসেবে আমাদের প্রতি প্রতিপক্ষের পূর্ব থেকে একটা আক্রোশ ছিল। আমার বাবার হত্যার নেতৃত্বে থাকা শহিদ সরদার কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দিদার হত্যা মামলার আসামি। কয়েকদিন আগে সে ওই মামলায় জামিনে মুক্ত হয়। তার ভাই সবর সরদার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। সহিদ সরদার ও তার ভাই লোকজন নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে বিজেপি কেন্দ্রীয় কমিটির যুব বিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, নিহতের স্ত্রী রেনু বেগমসহ ওই এলাকার অর্ধশতাধিক নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন। মু
কসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. মোস্তফা কামাল বলেন, মুকসুদপুরের বাহাড়া পশ্চিমপাড়ায় আকত আলি খান হত্যা হয়েছে এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। মামলা তদন্ত চলছে। এছাড়া বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদারকি করছেন। এ ঘটনার পর ওই এলাকায় ১০ থেকে ১২টি বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে সে বিষয়েও একটি মামলা হয়েছে। আর নিহতের বড় ছেলেকে আমরা গ্রেপ্তার করিনি যেহেতু মামলাটা অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছিল তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য তাকে আমরা এনেছি।
Leave a Reply